ফ্রন্টোইথময়ডাল এনসেফালোসিল রোগটি কী?
ফ্রন্টোইথময়ডাল এনসেফালোসিল একটি জন্মগত স্নায়বিক ত্রুটি, যেখানে শিশুর কপাল ও চোখের মাঝখানে হাড়ের ফাঁক দিয়ে মস্তিষ্কের ঝিল্লি বা তরল ফোলা অবস্থায় বেরিয়ে আসে। দেখতে টিউমারের মতো মনে হলেও এটি এক ধরনের Neural Tube Defect, যা গর্ভাবস্থায় শিশুর স্নায়ু ব্যবস্থার গঠন ঠিকমতো সম্পন্ন না হলে ঘটে।
মাথার খুলি অসম্পূর্ণভাবে গঠিত হওয়ার ফলেই এই জটিলতা দেখা দেয়।
রোগটির লক্ষণগুলো কী?
- কপাল ও চোখের মাঝখানে নরম ফোলা অংশ
- ফোলাটি চোখের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে
- চোখ ছোট বা বাঁকা দেখাতে পারে
- শিশুর কান্না, খাওয়ার সমস্যা বা ঘুমে ব্যাঘাত
- সময়ের সঙ্গে ফোলাটি আরও বড় হয়ে উঠতে পারে
ফ্রন্টোইথময়ডাল এনসেফালোসিল এর ঝুঁকি ও কিছু সতর্কতা:
এই রোগের জন্য মাকে সরাসরি দায়ী করা যায় না, তবে কিছু অবহেলা ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে:
১. ফোলিক অ্যাসিড না খাওয়া: গর্ভাবস্থার প্রথম দিকে ফোলিক অ্যাসিডের অভাব স্নায়ু বিকাশে সমস্যা সৃষ্টি করে।
২. অপরিকল্পিত গর্ভধারণ: প্রয়োজনীয় শারীরিক প্রস্তুতি ছাড়া গর্ভধারণ ঝুঁকিপূর্ণ।
৩. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না রাখা
৪. ক্ষতিকর ওষুধ বা রাসায়নিক দ্রব্য গ্রহণ
৫. রুবেলার মতো সংক্রমণ গর্ভাবস্থায় হওয়া
Frontoethmoidal Encephalocele রোগটির চিকিৎসা পদ্ধতি :
এই রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসার মাধ্যমে অনেক শিশুর জীবনে আশার নতুন দিগন্ত খুলে দেওয়া সম্ভব:
- MRI / CT Scan: রোগটি নির্ণয়ের প্রথম ধাপ
- নিউরোসার্জারি: অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ফোলা অংশ সরিয়ে মাথার খুলি ঠিক করা হয়
- পুনর্বাসন ও নিয়মিত ফলোআপ: শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশ নজরে রাখা জরুরি
Frontoethmoidal Encephalocele প্রতিরোধে করনীয়:
- গর্ভধারণের আগে থেকেই ফোলিক অ্যাসিড খাওয়া শুরু করুন
- গর্ভাবস্থার প্রথম ৩ মাসে প্রাক্-নাটাল চেকআপ বাধ্যতামূলক করুন
- পরিকল্পিতভাবে গর্ভধারণ করুন
- ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপসহ সব অসুস্থতা আগে থেকেই নিয়ন্ত্রণে রাখুন
- ক্ষতিকর ওষুধ ও রাসায়নিক থেকে দূরে থাকুন
শেষ কথা:
একটি শিশুর সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার দায়িত্ব শুধু তার পরিবারের নয়, আমাদের সবার।
ফ্রন্টোইথময়ডাল এনসেফালোসিল একটি জটিল রোগ হলেও এটি চিকিৎসাযোগ্য। কিন্তু দেরি হলে এর প্রভাব হতে পারে শিশুর চোখ, মস্তিষ্ক এমনকি প্রাণের ওপরও।
একজন মায়ের একটুখানি সচেতনতা আর সময়মতো নেওয়া পদক্ষেপই পারে একটি শিশুর জীবন বদলে দিতে।
আপনার একটু সচেতনতাই পারে একটি শিশুর জীবন বাঁচাতে, তাই সচেতন থাকুন সুস্থ থাকুন,
আপনাদের সুস্থতাই আমাদের কাম্য।