ডেঙ্গু একটি ভাইরাসজনিত রোগ, যা এডিস মশার কামড়ে ছড়ায়। এই মশা সাধারণত দিনে কামড়ায়, বিশেষ করে ভোর ও সন্ধ্যায়। ডেঙ্গুর প্রকোপ বর্ষাকালে সবচেয়ে বেশি দেখা যায়।
ডেঙ্গু আক্রান্ত ব্যক্তির রক্তে ভাইরাস থাকলে, মশা সেই রক্ত গ্রহণ করে এবং অন্য কাউকে কামড় দিলে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে।
প্রথমে হালকা জ্বর দিয়ে শুরু হলেও, সময়মতো চিকিৎসা না হলে এটি ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার বা ডেঙ্গু শক সিনড্রোম-এ রূপ নিতে পারে, যা প্রাণঘাতী হতে পারে।
ডেঙ্গু জ্বরের সাধারণ লক্ষণ :
ডেঙ্গুর প্রাথমিক লক্ষণগুলো সাধারণ জ্বরের সঙ্গে মিল থাকলেও কিছু বৈশিষ্ট্যপূর্ণ উপসর্গ থাকে:
• হঠাৎ করে ১০৩–১০৫°F তাপমাত্রায় জ্বর ওঠা
• মাথা ও চোখের পেছনে তীব্র ব্যথা
• পিঠ ও কোমরে অসহ্য ব্যথা
• হাড় ও পেশীতে ব্যথা (যার কারণে একে breakbone fever ও বলা হয়)
• শরীরে লালচে র্যাশ বা ফুসকুড়ি
• বমি ভাব ও খাবারে অরুচি
• চরম ক্লান্তি ও দুর্বলতা
ডেঙ্গু জ্বরের জটিল উপসর্গ :
সব রোগীর মধ্যে এই উপসর্গগুলো দেখা না গেলেও, নিচের যেকোনোটি দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে:
• নাক, মুখ বা প্রস্রাবে রক্ত
• চামড়ার নিচে রক্তক্ষরণ
• ঘন ঘন বমি বা বমির সঙ্গে রক্ত
• চোখ ঝাপসা দেখা, মাথা ঘোরা
• অচেতন হয়ে যাওয়া বা খিঁচুনি
গুরুত্বপূর্ণ: শিশু ও বয়স্কদের ক্ষেত্রে উপসর্গগুলো অনেক সময় ভিন্ন হতে পারে এবং শুরুতে খুব হালকা মনে হতে পারে।
ডেঙ্গু শনাক্ত করার সহজ উপায় :
ডেঙ্গু শনাক্তের জন্য কিছু সহজ কিন্তু কার্যকর পদ্ধতি নিচে উল্লেখ করা হলো:
১. জ্বরের ধরন পর্যবেক্ষণ করুন
ডেঙ্গুর জ্বর সাধারণত হঠাৎ করে শুরু হয় এবং দীর্ঘস্থায়ী হয়। ৪-৭ দিনের বেশি জ্বর থাকলে এবং ওষুধে কম না হলে ডেঙ্গু হতে পারে।
২. রক্ত পরীক্ষা করুন
ডেঙ্গু সনাক্তকরণের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য উপায় হলো বিশেষ রক্ত পরীক্ষা, যেমন NS1 অ্যান্টিজেন টেস্ট, অথবা IgM ও IgG অ্যান্টিবডি টেস্ট।
৩. শরীরের র্যাশ ও রক্তক্ষরণ লক্ষ্য করুন
ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের শরীরে লাল দাগ বা ক্ষুদ্র রক্তক্ষরণ দেখা যায়, যা ডেঙ্গুর গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ।
৪. শারীরিক দুর্বলতা বা মাথা ঘোরার উপসর্গ দেখুন
ডেঙ্গু রোগীরা সাধারণত খুব দুর্বল অনুভব করেন এবং মাথা ঘোরা বা চক্কর আসতে পারে।
ডেঙ্গু হলে করণীয় :
- পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন এবং শরীরকে হাইড্রেটেড রাখুন।
- প্রচুর পরিমাণ পানি, ফলের রস অথবা ইলেক্ট্রোলাইট দ্রবণ পান করুন।
- ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোনো অ্যাসপিরিন বা আইবুপ্রোফেন জাতীয় ওষুধ খাবেন না।
- যদি রক্তপাত বা শরীরে অন্য কোন অস্বাভাবিক লক্ষণ দেখা দেয়, সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে যান।
- চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ গ্রহণ করুন এবং নিয়মিত চিকিৎসা পরীক্ষা করন।
ডেঙ্গু জ্বরের ঘরোয়া চিকিৎসা :
ডেঙ্গু জ্বর হলে দ্রুত ও সঠিক চিকিৎসা নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে অনেক সময় পরিবার এবং রোগী নিজে হাসপাতালে যাওয়া বা পরীক্ষা করানোর জন্য ঝামেলায় পড়েন।
তাই Health Support বাসায় বসে সহজ ও নিরাপদ চিকিৎসা সেবা নিয়ে এসেছে, যাতে আপনার চিকিৎসা আরও দ্রুত ও ঝামেলামুক্ত হয়।
Health Support এর সেবাসমূহ:
টেলিমেডিসিন সেবা: বাসায় বসে ডাক্তারের সাথে ভিডিও কনসালটেশন করে আপনার উপসর্গ নিয়ে কথা বলতে পারবেন।
হোম সম্পল কালেকশন: রক্ত পরীক্ষার জন্য আমাদের পেশাদার টিম আপনার বাসায় এসে নমুনা সংগ্রহ করবে, যাতে হাসপাতালে যাওয়া না লাগে।
নার্সিং সেবা: রক্ত পরীক্ষার জন্য আমাদের পেশাদার টিম আপনার বাসায় এসে নমুনা সংগ্রহ করবে, যাতে হাসপাতালে যাওয়া না লাগে।
হোম ভিজিট ডাক্তারের সেবা: বিশেষ প্রয়োজনে ডাক্তার আপনার বাড়িতে এসে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও চিকিৎসা প্রদান করবেন।
আমাদের এই সেবাগুলো ডেঙ্গুর সময় আপনার ও আপনার পরিবারের ঝামেলা কমিয়ে দ্রুত আরোগ্য লাভ নিশ্চিত করবে।
ডেঙ্গু প্রতিরোধের কার্যকর টিপস :
• মশার কামড় থেকে নিজেকে রক্ষা করুন (দিনেও মশারি ব্যবহার করুন)
• ঘরের আশপাশে কোথাও পানি জমতে দেবেন না
• পানির পাত্র, টায়ার, ফুলদানি ইত্যাদি সপ্তাহে অন্তত ১ দিন পরিষ্কার করুন
• মশানাশক স্প্রে ব্যবহার করুন
• ফুলহাতা জামা পরুন, বিশেষ করে সকাল ও সন্ধ্যায়
উপসংহার :
ডেঙ্গু একটি প্রতিরোধযোগ্য রোগ, তবে অবহেলা করলে তা প্রাণঘাতী হতে পারে। তাই জ্বর হলে সময় নষ্ট না করে লক্ষণ গুলো লক্ষ্য করুন এবং প্রয়োজনে রক্ত পরীক্ষা করান। একসাথে সবাই সচেতন হলে আমরা সহজেই ডেঙ্গুর মতো ভয়াবহ রোগকে রুখে দিতে পারি।
তাই সচেতন থাকুন সুস্থ থাকুন, ধন্যবাদ।