অটোফ্যাজি হল একটি কোষীয় প্রক্রিয়া যখন মানবদেহ দীর্ঘ সময় (সাধারণত ১৪ থেকে ২৪ ঘণ্টা) না খেয়ে থাকে, তখন এটি “অটোফ্যাজি” নামক একটি প্রক্রিয়ায় প্রবেশ করে, যার অর্থ হলো “নিজেকে খাওয়া”।
যখন মানবদেহ ক্ষুধার্ত থাকে, তখন মানবদেহের সকল সঠিক ভাবে পরিচালনা করতে নিজেকেই খেতে শুরু করে। অসুস্ত, বারধক্কজনিত কোষ, ক্যান্সার ও অ্যালঝেইমারের মতো রোগের কোষ গুলো খেয়ে ফেলে।
এই অবস্থায়, শরীর পুরনো, ক্ষতিগ্রস্ত বা অসুস্থ কোষগুলো ভেঙে ফেলে এবং পুনর্ব্যবহার করে। এর মধ্যে বয়সজনিত কোষ, প্রদাহ সৃষ্টিকারী কোষ, এমনকি কিছু ক্ষেত্রে ক্যান্সার ও অ্যালঝেইমারের মতো রোগের সঙ্গে যুক্ত কোষও অন্তর্ভুক্ত।
এই প্রাকৃতিক ডিটক্স ও মেরামতের প্রক্রিয়া কোষের ভেতরের বর্জ্য, ত্রুটিপূর্ণ প্রোটিন ও মৃত মাইটোকন্ড্রিয়া পরিষ্কার করে, ফলে শরীরের ভিতর থেকে এক ধরণের “পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা” হয়।
এটি একটি জৈবিক আত্মরক্ষামূলক প্রক্রিয়া, যা কেবল শক্তি সঞ্চয়ই করে না, বরং শরীরের টিস্যু পুনর্গঠন ও রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি করতেও সহায়তা করে।
জাপানি বিজ্ঞানী ইয়োশিনোরি ওসুমি এই প্রক্রিয়াটি আবিষ্কার করেন, যার জন্য তিনি ২০১৬ সালে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। বর্তমানে এটি স্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু নিয়ে গবেষণার একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে।
অনিয়মিত উপবাস বা ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং এই প্রক্রিয়াকে উৎসাহিত করতে পারে, যা দেহকে নতুনভাবে গঠন ও সতেজ করতে সহায়তা করে। তবে এটি সবার জন্য উপযুক্ত নয়, এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে শুরু করাই উত্তম।